• মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১০:২০ অপরাহ্ন
শিরোনাম
🍯 টাকায় কেনা যায় না ভালোবাসার দাম, রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌺 তারিখ:২৮/১০/২০২৫ উপন্যাস: বিশ্বাস ও মর্যাদার গল্প , রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌺 তারিখ:২৮/১০/২০২৫ 🎉 অবশেষে হাতে এলো ‘টক অফ দ্য টাউন’! 🎉 🍯 গল্প: “মধু মিয়ার ভালোবাসা” রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌺 তারিখ:২৮/১০/২০২৫ শিরোনাম:ঈমানের বিনিময়ে দালালি — এক আত্মঘাতী লেনদেন। রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম  তারিখ:২৮/১০/২০২৫ ছোট গল্প:অকৃতজ্ঞ বন্ধু রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম তারিখ:২৮/১০/২০২৫ সুখবর… সুখবর….ফুটওয়্যার শিল্পে বিনামূল্যে কারিগরি প্রশিক্ষণ: ভাতা ও চাকরির নিশ্চয়তা সহ ভর্তির সুযোগ। গল্প: মর্যাদার মাপকাঠি(ঠ্যাং এর নিচে) লেখক: মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম তারিখ:২৭/১০/২০২৫ ভ্রমণ কাহিনী:কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন দ্বীপ রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌺  তারিখ:২৭/১০/২০২৫ শিরোনাম:ও আমার প্রিয়তমা স্ত্রী, রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম  তারিখ:২৭/১০/২০২৫

বৃষ্টি ভেজা রাতে ✍️ মোঃ নজরুল ইসলাম (বিপুল)

মোঃ নজরুল ইসলাম (বিপুল) / ১৪৭ বার পড়া হয়েছে
আপডেট: সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫

বৃষ্টি ভেজা অন্ধকার রাত। গ্রামের মেঠো পথ ধরে  একা হেঁটে যাচ্ছিল তপু। বন্ধু ও সহকর্মী সবুজকে হঠাৎ পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার পর ওর ব্যবহৃত জিনিসপত্র ও এই খবর পৌঁছে দিতে সে অর্জুনপুর এসেছে। চারপাশ শুনশান, শুধু ঝিঁঝি পোকার একটানা ডাক আর ভেজা পাতার খসখসানি। হঠাৎ দূরে একটা পুরনো, ভাঙা বাড়ির আবছা আলো চোখে পড়ল তার। বিড়বিড় করে বলল গতবছর প্রথমবার বন্ধু সবুজের সাথে এই গ্রামে যখন এসেছিলাম তখন তো এখানে কোন পুরানো রাজবাড়ী চোখে পরেনি। কৌতূহলী হয়ে সেদিকে এগিয়ে গেল তপু।

গেটটা পুরনো আর মরচে ধরা, সামান্য ধাক্কাতেই ক্যাঁচ করে খুলে গেল। ভেতরে ঢুকে তপু দেখল বাড়িটার দেয়াল থেকে চুনকাম খসে পড়ছে, আর জানালার কপাটগুলো বাতাসে হালকাভাবে দুলছে। সাহস করে বারান্দায় উঠলো সে। দরজার কড়াটা ধরতেই ঠান্ডা একটা স্রোত তার হাত দিয়ে বয়ে গেল।

ধীরে ধীরে দরজাটা খুলতেই তপুর চোখ আটকে গেল ভেতরে। আবছা আলোয় একটি চেয়ারে কেউ একজন বসে আছে। লম্বা, পাতলা শরীর, আর মাথাটা নীচের দিকে ঝুঁকে। তপুর বুকের ধুকপুকানি বাড়ছিল। সাহস করে সে ডাকল, “কে ওখানে?”

কোনো উত্তর এল না। শুধু একটা দমকা ঠান্ডা বাতাস ঘরে ঢুকল। সে আবার ডাকতে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই চেয়ারে বসা লোকটি ধীরে ধীরে মাথা তুলল।

আলোটা তার মুখের ওপর পড়তেই তপুর আত্মা যেন শুকিয়ে গেল। ফ্যাকাসে, রক্তশূন্য মুখ, কোটর থেকে বেরিয়ে আসা দুটো জ্বলন্ত লাল চোখ। সেই চোখের দিকে তাকালেই মনে হচ্ছিল যেন কেউ শরীরের ভেতর থেকে সব প্রাণশক্তি শুষে নিচ্ছে।

তপুর মনে হলো তার পা দুটো মাটিতে গেঁথে গেছে, সে আর নড়তে পারছে না। লোকটা ঠোঁট না নড়িয়েই যেন ফিসফিস করে বলল, “এখানে কেন এসেছিস?” তোর তো জেলখানায় থাকার কথা…..?

তপুর গলা শুকিয়ে কাঠ, কোনো কথা বের হলো না। তার শুধু মনে হচ্ছিল ঐ দুটো চোখ যেন তার ভেতরের সব ভয় আর দুর্বলতা দেখতে পাচ্ছে।

হঠাৎ একটা বিকট শব্দ হলো, আর আলোটা নিভে গেল।

তপু জ্ঞান হারানোর আগের মুহূর্তগুলো ভয়ঙ্কর স্মৃতিতে ভরে ছিল। সেই চেয়ারে বসা মূর্তিটা যখন ধীরে ধীরে মাথা তুলেছিল, আর আবছা আলোয় তার মুখটা দেখা গিয়েছিল, তখন তপুর মনে হয়েছিল যেন সাক্ষাৎ যমদূত তার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সেই বীভৎস মুখের ভয়ঙ্করতার থেকেও বেশি কিছু ছিল যা তপুর দৃষ্টি কেড়েছিল – লম্বা, কালো চুল, আর সেই চুলের ফাঁক দিয়ে উঁকি মারা একজোড়া অপলক, বিস্ফারিত চোখ।

কিন্তু সেই চোখ দুটো শুধু লাল ছিল না, তাদের মধ্যে ছিল গভীর, রহস্যময় এক আকর্ষণ। তপু ভয় পেলেও, কেন যেন তার চোখ ফেরাতে পারছিল না। সেই চোখের গভীরে সে যেন এক অচেনা জগৎ দেখতে পাচ্ছিল – পুরনো দিনের ধ্বংসস্তূপ, কান্নার রোল, আর এক করুণ, অসহায় মুখের প্রতিচ্ছবি।

ঠিক তখনই, সেই চোখের মণি দুটো যেন ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হতে শুরু করলো। লাল রঙ ফিকে হয়ে গেল, আর সেখানে ভেসে উঠলো একজোড়া শান্ত, স্নিগ্ধ চোখ – ঠিক যেন পূজার চোখ! সেই একই গভীর মায়া, সেই একই করুণ চাহনি যা তপু সেদিন পূজার চোখে দেখেছিল।

তপুর মনে হলো যেন তার পায়ের নীচের মাটি সরে যাচ্ছে। পূজা? এখানে? এই ভয়ঙ্কর, বীভৎস চেহারার আড়ালে? এটা কি সত্যি? নাকি তার মনের ভুল?

সে কিছু বলার আগেই মূর্তিটা ঠোঁট না নড়িয়ে ফিসফিস করে উঠলো, “আমায় চিনতে পারছিস?” সেই কণ্ঠস্বরও যেন পূজার কণ্ঠস্বরের প্রতিধ্বনি।

তপুর সমস্ত শরীর ঠান্ডা হয়ে গেল। পূজার মুখ, পূজার কণ্ঠস্বর, কিন্তু এই ভয়ঙ্কর রূপে? এটা কি কোনো দুঃস্বপ্ন? নাকি অন্য কিছু?

আলোটা নিভে যাওয়ার ঠিক আগে, তপু স্পষ্ট দেখতে পেল – সেই চোখ দুটো ধীরে ধীরে আবার লাল হয়ে উঠছে, আর তাদের মধ্যে ফিরে আসছে সেই ভয়াল, আত্মাশোষণকারী দৃষ্টি। সেই শেষ মুহূর্তের দেখা, পূজার শান্ত চোখের সেই ক্ষণিকের ঝলক, জ্ঞান হারানোর আগে তপু কোনোদিন কল্পনাও করতে পারেনি। সেই দৃশ্য তার মনে চিরকালের জন্য খোদাই হয়ে গিয়েছিল – ভয় আর বিস্ময়ের এক অদ্ভুত মিশ্রণ।

তপুর নিস্তেজ শরীর তখনও ভেজা মাটিতে পড়ে ছিল। চারপাশের অন্ধকার আরও ঘন হয়ে আসছিল, যেন আকাশ থেকে কেউ কালো চাদর টেনে নামাচ্ছিল। দূরে ঝিঁঝি পোকার ডাক ছাড়া আর কোনো শব্দ নেই। হঠাৎ, তপুর ঝাপসা চোখে একটা নড়াচড়া ধরা পড়ল। ভাঙা বাড়ির বারান্দার আবছা আলোয় একটা লম্বা, কালো ছায়া ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে।

ছায়াটা মানুষের মতো, কিন্তু তার কোনো স্পষ্ট আকার নেই। মনে হচ্ছিল যেন জমাট বাঁধা অন্ধকার, যার কোনো মুখ নেই, কোনো হাত-পা নেই, শুধু একটা অস্পষ্ট, ভয়াল অবয়ব। ছায়াটা যত কাছে আসছিল, ততই চারপাশের বাতাস ভারী হয়ে উঠছিল, তপুর বুকের ভেতরটা যেন দমবন্ধ হয়ে আসতে চাইছিল।

সে নড়াচড়া করার চেষ্টা করলো, কিন্তু তার শরীর অবশ, যেন কোনো অদৃশ্য শক্তিতে বাঁধা। তার মনে পড়লো সেই লাল চোখের চাহনি, সেই ফিসফিস করা কণ্ঠস্বর – “আমায় চিনতে পারছিস?”

ছায়া মূর্তিটি একেবারে তার কাছে এসে থামল। তপুর মনে হলো যেন একটা হিমশীতল হাত তার বুকের ওপর চেপে বসছে। সে তার অস্পষ্ট মুখের দিকে তাকিয়ে থাকার চেষ্টা করলো, কিন্তু সেখানে শুধু অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই দেখতে পেল না।

হঠাৎ, ছায়া মূর্তির ভেতর থেকে একটা ঠান্ডা, তীক্ষ্ণ কণ্ঠস্বর ভেসে এল, “তুই আমার শান্তি কেড়ে নিয়েছিস…”

তপুর মনে হলো তার হৃৎস্পন্দন থেমে যাচ্ছে। সে বুঝতে পারছিল না কে এই ছায়া মূর্তি, কেন সে তার শান্তি কেড়ে নিয়েছে। তার মনে শুধু একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল – পূজা, সেই শান্ত চোখের পূজা, এই অন্ধকারের সাথে তার কী সম্পর্ক?

ছায়া মূর্তিটি আরও ঝুঁকে এল, যেন তপুর মুখের খুব কাছে তার অস্পষ্ট, অন্ধকার মুখটা নিয়ে আসতে চাইছে। তপু তার সর্বশক্তি দিয়ে চোখ বন্ধ করলো, শুধু একটা শীতল স্পর্শ অনুভব করলো তার কপালে… তারপর আবারও সব অন্ধকার হয়ে গেল।

সকালে যখন গ্রামের লোকেরা তপুকে খুঁজে পেল, তার জ্ঞান তখনও ফেরেনি। তবে তার মুখের অভিব্যক্তি ছিল আরও বেশি ভয়ংকর, যেনসে সাক্ষাৎ মৃত্যুর ছায়া দেখেছে। আর তার কপালে ছিল একটা অদ্ভুত, শীতল দাগযেন কেউ বরফের মতো ঠান্ডা কিছু দিয়ে স্পর্শ করেছে। তপুর বর্নীত সেই ভয়ঙ্কর ছায়া মূর্তিটির রহস্য আজও কেউ ভেদ করতে পারেনি।

~@বিপুল…..


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এজাতীয় আরো লেখা

📲 Kaj Kori App – মোবাইল দিয়ে ইনকাম করুন!

অ্যাপে রয়েছে Rocket Game, Ludo, Spin & Earn, আর্টিকেল রিডিং, রেফার বোনাস — ১০০ পয়েন্ট = ১ টাকা

📥 Kaj Kori App ডাউনলোড করুন