• মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৪০ অপরাহ্ন
শিরোনাম
কবিতা: সময়মতো বিবাহ  রচনাঃমাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম  তারিখ:১/১১/২৩ 🖋️ গল্প: “আলেয়ার আফসোস আর সলিম উল্লাহর বোধোদয়”। রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌺 মজার গল্প : বাঁশ খানের ন্যায়ের বাঁশ রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম ছোট গল্প: ক্ষুদ্র প্রাণীর শক্তি রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম  গল্প: “ছাগলের বাচ্চার হক” রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম  💐গল্প: ভালোবাসার ঘোষণা, রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌺 🍌বাংলাদেশের মাজার সংস্কৃতি ও গাজার বাজার: একটি বিশ্লেষণমূলক প্রবন্ধ, রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌺 তারিখ:২/০৪/২০২৩ শিরোনাম:স্বামীর পর্যাপ্ত সম্পদ না থাকা সত্ত্বেও দাবি দাওয়া আদায় প্রসঙ্গে।, রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম গল্প: মুরগি ও শিয়ালের চালাকি, রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম। 🖋️স্বামীকে অপমান ও তার কৃতজ্ঞতা স্বীকার না করার পরিণাম: ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি, রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌺 তারিখ:১/১১/২০২৫

উপন্যাস: অজানা আকর্ষণ (একটি হৃদয় ছোঁয়া গল্প – অবাধ মেলামেশা থেকে তাওবার পথে)।

Reporter Name / ২৪৪ বার পড়া হয়েছে
আপডেট: মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০২৫

 

উপন্যাস: অজানা আকর্ষণ
(একটি হৃদয় ছোঁয়া গল্প – অবাধ মেলামেশা থেকে তাওবার পথে)
পর্ব: ১ — সূচনা

ঢাকার এক অভিজাত এলাকার স্বনামধন্য একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। আকাশের মতো মুক্ত ক্যাম্পাস, আর তারই মাঝে ছড়ানো-ছিটানো ছাত্র-ছাত্রীদের দল। কারো চোখে স্বপ্ন, কারো চোখে ধোঁকা। সবাই যেন নিজের মতো করে ‘লাইফ’ উপভোগ করতে ব্যস্ত।
তেমনই একজন, আদিবা। স্কলারশিপে পড়ছে, পড়াশোনায় ভালো, দেখতে সুন্দর। কিন্তু একটা জিনিস সে বুঝতে পারেনি—তার চারপাশে নীরব একটা আগুন ছড়িয়ে যাচ্ছে, যেটা ‘মর্ডান মেন্টালিটি’র নাম করে লুকিয়ে রাখা হয়।
আদিবার বন্ধু নীলয়, আরেকজন টপ স্টুডেন্ট। কফিশপে দেখা, ক্লাস শেষে পার্কে হাঁটা, লাইব্রেরিতে একসাথে পড়া—সবই খুব ‘নরমাল’ মনে হয় সবার কাছে। কিন্তু নীলয়ের চোখের চাহনিতে মাঝে মাঝে যে আগ্রহ, সেটা আদিবা টের পেত।
একদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সফরে তারা গেল কক্সবাজারে। হোটেল রুম বরাদ্দ দেওয়া হলো ছেলে-মেয়েরা আলাদা, কিন্তু রাতের রাস্তায় হোটেলের লবিতে নীলয় হঠাৎ বলল, “আদিবা, চল একটু বিচে যাই, সবাই ঘুমিয়ে গেছে, এই সময়টা একান্ত।”
সেদিন প্রথমবার আদিবার হৃদয়ে কেঁপে উঠল অজানা এক অনুভব। “সবাইই তো যায়, একটা ঘোরাঘুরি… তাছাড়া সে তো আমার বন্ধু,”—মনকে বুঝালো সে। অথচ সে জানতো না, এই মুহূর্তটা তার ঈমানের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা।
পর্ব: ২ — হারিয়ে যাওয়া
সেদিনকার সেই বিচের হাঁটাচলা, হাতে হাত ধরা, ছবি তোলা—সবকিছুই নীলয়ের জন্য স্মৃতি হলেও আদিবার মনে যেন এক বোঝা হয়ে রইল। কারণ এরপর থেকে নীলয় পাল্টে গেল। সে চেয়েছিল আরও কিছু, আর আদিবা ছিল দ্বিধান্বিত।
নীলয়ের চোখে এবার আর কেবল বন্ধুত্ব ছিল না, ছিল দাবী। কবে আবার দেখা হবে, কখন হাতে হাত, কখন আরও এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া। আদিবা একদিকে ক্লাস, অন্যদিকে এই মানসিক চাপ—সব মিলিয়ে তার জীবন এলোমেলো হয়ে গেল।
একদিন এক বন্ধুর জন্মদিনে, হোটেলের ছাদে ‘সেলিব্রেশন’। নীলয়ের আবদারে আদিবা গেল, যদিও মন চাইছিল না। সেখানে সে যা দেখল, তাতে তার আত্মা কেঁপে উঠল। মেয়েরা নাচছে, ছেলেরা হাসছে, স্পিকারে বাজছে গান—এই তো ‘মডার্ন’ কালচার!
সেই রাতে নীলয়ের একটা কথা তাকে ছিন্নভিন্ন করে দিল, “তুমি তো আমার খুব আপন, আজ একটু ভালোবাসা উপহার দাও।”
আদিবা কেঁদে ফেলল—“তুমি আমাকে কোন পথে নিচ্ছো? আমি কি এতটাই সস্তা?”
নীলয় বিরক্ত হয়ে বলল, “তাহলে এতদিন কেন ছিলে আমার সাথে? কফি, পার্ক, ছবি, সেলফি—সবই কি অভিনয়?”
পর্ব: ৩ — বোধোদয়
সেই রাতের পর আদিবা আর কখনও ক্যাম্পাসে হাসিমুখে যায়নি। চোখে ছিল অশ্রু আর অন্তরে ছিল লজ্জা।
সে একা একদিন এক মসজিদের পাশে গিয়ে বসেছিল। সেখানে একজন হুজুর তাকে বললেন:
“রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তোমরা নারীদের মাঝে প্রবেশ কোরো না।’ (সহিহ বুখারী)”
তিনি আরো বলেন, “পুরুষ ও নারীর মাঝে অবাধ মেলামেশা যেন আগুন আর বারুদের মাঝে খেলার মতো।”
হুজুরের কথা শুনে, দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে বলল, “আমার সব কিছুই শেষ হয়ে গেছে।”
হুজুর বললেন, “না বোন, এখনো সময় আছে। তাওবা করো, নতুন জীবন শুরু করো।”
হুজুর নিজস্ব একটি কবিতা আবৃতি করলেন বললেন:
“অবাধ মেলামেশা আনছে বিষাদ,
লজ্জা হারায়ে নষ্ট হয় জাত।
নজর ও বিবেক হয় ধীরে ধীরে শুষ্ক,
শয়তান হাসে, হয় ঈমান দুর্বল ও ক্ষুদ্র।
ভাঙে পরিবার, উঠে শান্তির ঘর,
বেপরোয়া মন খোঁজে হারাম গোপন দর।
সতীত্ব হারায়ে চোখে নামে অন্ধকার,
তওবার পথেই মিলবে মুক্তির দ্বার।”

সেদিনই আদিবা নামাজ শুরু করল, পর্দা ধরল, বন্ধু তালিকা ছাঁটাই করল। বিশ্ববিদ্যালয়ে সে ইসলামি লিটারেচার ক্লাব খোলার উদ্যোগ নিল। ‘আল্লাহর পথে ফিরে আসি’ এই স্লোগানে পোস্টার টানাল।
পর্ব: ৪ — সমাজ পরিবর্তনের বার্তা
আদিবার পরিবর্তন দেখে অনেকে হাসাহাসি করল, কেউ বলল “হিপোক্রেট”, কেউ বলল “ডিপ্রেশনে গেছে।” কিন্তু সে হাসিমুখে বলল, “আমি একজনের ভালোবাসা পেয়েছি—যিনি কখনও প্রতারণা করেন না, তিনি আল্লাহ।”
একদিন তারই উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সেমিনার হয়:
“অজানা আকর্ষণ—ফ্রিমিক্সিং এর ভয়াবহতা”
তাতে সে বলল:
“আমরা যেসব পার্ক, অফিস, বিশ্ববিদ্যালয়, এমনকি সুইমিং পুল বা নদীর পাড়ে একসাথে সময় কাটাই—এসবের পেছনে শয়তান থাকে।
রাসূল (সাঃ) বলেন, ‘পুরুষ ও নারীর মাঝে তৃতীয় জন শয়তান।’ (তিরমিজি)”
তরুণদের সে বলল, “প্রেম যদি হয় হালাল, তাহলে সে বিয়েতে পৌঁছাবে। আর যদি হয় হারাম, তাহলে তা আগুন।”
তাকে দেখে অনেক ছেলেমেয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করল। কেউ কেউ হিজাব পরা শুরু করল, কেউ বন্ধুত্ব ভাঙল। এমনকি নীলয়ও একদিন তার কাছে এসে বলল, “আমি তাওবা করতে চাই। তুমি আমাকে আল্লাহর পথে ডেকে নাও।”
উপসংহার:
এই উপন্যাসের মাধ্যমে দেখা যায়, আধুনিক সমাজে ‘অজানা আকর্ষণ’ কীভাবে এক নারীর হৃদয়, সমাজ এবং জীবনকে বদলে দিতে পারে। তবে ফিরে আসার পথ সবসময়ই খোলা। আল্লাহ বলেন,
“হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছো, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। তিনি সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করেন।” (সূরা যুমার: ৫৩)
সমাজের জন্য উপদেশ:
সহ-শিক্ষা ব্যবস্থায় সীমারেখা থাকা জরুরি
নারী-পুরুষ মেলামেশায় পার্থক্য থাকা উচিত
সামাজিক মিডিয়া, পার্ক, অফিস ও হোটেল—সব জায়গায় হায়া ফিরিয়ে আনতে হবে
ইসলামি সাহিত্য ও হাদিসভিত্তিক আলোচনা সভা চালু করতে হবে
প্রেম নয়, হালাল সম্পর্কের পথে হাঁটা শিখতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এজাতীয় আরো লেখা

📲 Kaj Kori App – মোবাইল দিয়ে ইনকাম করুন!

অ্যাপে রয়েছে Rocket Game, Ludo, Spin & Earn, আর্টিকেল রিডিং, রেফার বোনাস — ১০০ পয়েন্ট = ১ টাকা

📥 Kaj Kori App ডাউনলোড করুন