আমাদের পরিচয়: মুসলিম
ইসলাম একটি আলোকিত জীবনব্যবস্থা, যা মানুষের জন্য প্রেরিত হয়েছে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নির্দেশনা হিসেবে। এই দ্বীনের অনুসারীরা কোনো জাতিগত পরিচয়ে পরিচিত নয়, বরং একটি ঈমানভিত্তিক মহান উপাধিতে ভূষিত—আর সেটাই হলো “মুসলিম”। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা নিজেই এই পরিচয় দিয়েছেন তাঁর বান্দাদের জন্য।
কুরআনের দলীল অনুযায়ী, সূরা হজ্জ (২২:৭৮)-এ আল্লাহ বলেন:
“هُوَ سَمَّاكُمُ الْمُسْلِمِينَ مِن قَبْلُ وَفِي هَـٰذَا”
অর্থাৎ, “তিনি পূর্বে এবং এই কুরআনেও তোমাদের নাম রেখেছেন ‘মুসলিম’।’’ এই আয়াতে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, আমাদের ‘মুসলিম’ নামটি মানুষের বানানো কোনো নাম নয়; বরং তা মহান রবের পক্ষ থেকে দেওয়া সম্মানিত পরিচয়।
আবার, সূরা আলে ইমরান (৩:১০২)-এ আল্লাহ বলেন:
“তোমরা মুসলিম না হয়ে মৃত্যু বরণ করো না”।
অর্থাৎ, জীবন যাপন থেকে শুরু করে মৃত্যুর শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত একজন মুমিনের পরিচয় হতে হবে “মুসলিম”। এই পরিচয়ের সঙ্গেই একজন মানুষের ইহকাল ও পরকালের শান্তি জড়িয়ে আছে।
হাদীসের আলোকে, সহীহ মুসলিম (হাদীস ৮)-এ রাসূল (ﷺ) বলেন:
“মুসলিম সে, যার হাত ও জিহ্বা থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।”
এখানে ‘মুসলিম’ শুধু নামধারী পরিচয় নয়; বরং তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, আচরণ এবং সমাজে অন্য মুসলিমদের প্রতি নিরাপদ আচরণই তার প্রকৃত মুসলিম হওয়ার প্রমাণ।
সহীহ বুখারী (হাদীস ৯)-এ রাসূল (ﷺ) বলেন:
“আমি আদিষ্ট হয়েছি যাতে মানুষকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা পর্যন্ত যুদ্ধ করি। যখন তারা এটি বলবে, তখন তারা আমার পক্ষ থেকে জান ও মাল রক্ষা পাবে।”
এই হাদীসের মাধ্যমে বোঝা যায়, কেউ যখন তাওহীদের ঘোষণা দেয়, তখন সে ইসলামে প্রবেশ করে এবং মুসলিম হিসেবে পরিচিত হয়।
সারাংশ ও উপসংহার, কুরআন ও সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত—ইসলামের অনুসারীর একমাত্র পরিচয় “মুসলিম”। এই পরিচয়ের মধ্যে রয়েছে আত্মসমর্পণ, আনুগত্য, শান্তি ও কল্যাণ।
❝ইসলামের অনুসরণ মানেই আত্মসমর্পণ – আর আত্মসমর্পণকারীই হলো প্রকৃত মুসলিম❞
আমরা গর্ব করে বলি—আমাদের ধর্ম ইসলাম, আর আমাদের পরিচয় “মুসলিম”। এ পরিচয় শুধু একটি নাম নয়, বরং একটি দায়িত্ব, একটি সম্মান, এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চাবিকাঠি।
“আমাদের পরিচয় মুসলিম”—এটাই আমাদের অস্তিত্বের কেন্দ্রবিন্দু।
রচনায়: মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌺
আরবি :প্রভাষক বলদীআটা ফাজিল স্নাতক মাদ্রাসা।
ধনবাড়ী, টাঙ্গাইল জেলা।