উপন্যাস: একটি জানালা দুটি মন পর্ব ১৩
লেখক: আরাফাতুল ইসলাম
রাতের আলো ক্রমশ গাঢ় থেকে গাঢ়তর হচ্ছে। বারান্দার সামনের গাছে একজোড়া পাখি এসে বসেছে—একটা হালকা কিচিরমিচির করে, আরেকটা নিশ্চুপ।
তেমনি নির্জন রাত্রিতে সঙ্গী করে সাহিদা আর আরাফাত বসে আছে বারান্দার বেঞ্চে।
আরাফাত মৃদু স্বরে বলে, — “তোর পাশে এভাবে বসে থাকতে থাকতে, আমি নিজেই বদলে যাচ্ছি।”
সাহিদা মাথা হেলিয়ে ওর কাঁধে রাখে।
— “ভালোবাসা মানুষকে বদলায়। তুই বদলাচ্ছিস মানে তুই ভালোবাসছিস।”
চুপচাপ মুহূর্ত।
শুধু বাতাস বইছে—ভালোবাসা বইছে।
—
রাত ৯টা।
ভেতরের ঘরে বসে গল্প চলছে মাহিয়া, তিশা আর সাহিদার।
তিশা হুট করে বলে ওঠে,
— “এই যে তোমার আরাফাত ভাইয়ের প্রেম এত দূর, তো একবার ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করা উচিত না?”
মাহিয়া তো চমকে যায়, — “তুই তো আগেই বলেছিলি! এখনই ঠিক করে ফেলি—মিরসরাই যাব, তিন দিনের ট্যুর!”
সাহিদা একটু চুপ করে।
তিশা বলে,
— “এই রোমান্স শুধু ছাদে আর বারান্দায় না, পাহাড়ের ধারে দাঁড়িয়ে হোক। রিসোর্টে রাত কাটানো হোক। সব থাকবে—ভালোবাসা, ঝরনার শব্দ আর নরম রাতের বাতাস।”
মাহিয়া ফোন হাতে নিয়ে কাউন্ট করতে শুরু করলো— — “আমি, তুই, সাহিদা, আর আরাফাত—চারজন… ব্যস! চারজনে একটা হোটেলে উঠবো। ঘুরবো পাহাড়, সাগর—সব!”
সাহিদা কাঁধ নাড়িয়ে বলে,
— “আম্মু কি রাজি হবে?”
মাহিয়া হেসে বলে,
— “তুই শুধু বলিস—‘মাহিয়ার সঙ্গে যাচ্ছি, তিশাও থাকবে।’ বাকি আমার দায়িত্ব।”
আরাফাত তখন পেছন থেকে এসে বলে,
— “আমিও যাবো?”
তিশা হেসে বললো,
— “তোমাকে বাদ দিলে আমাদের রোমান্টিক প্ল্যান ধ্বংস হয়ে যাবে।”
—
রাত গভীর।
সাহিদা আর আরাফাত ছাদে বসে। চাঁদ ঝলমল করছে।
আরাফাত বলে,
— “জানো, পাহাড়ের ধারায় তোকে নিয়ে বসার স্বপ্ন অনেক দিন ধরে… এবার মনে হয় সত্যি হবে।”
সাহিদা আস্তে বলে,
— “যেখানে তুমি আছো, সেখানে পাহাড়েরও রোমান্স থাকে। আমি যাবো।”
আরাফাত ওর হাত চেপে ধরে বলে,
— “তুমি পাশে থাকলেই গল্প এগোয়, জীবনও এগোয়।”
সাহিদা চোখ বন্ধ করে বলে,
— “তুমি না থাকলে আমি গল্পে
র মাঝপথে থেমে যেতাম।”
চলবে…