পর্ব – ১৪
লেখক: আরাফাতুল ইসলাম
সকালবেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে রওনা হয়েছে চারজন—আরাফাত, সাহিদা, মাহিয়া আর তিশা।
গন্তব্য: মিরসরাই।
তিন দিনের টুর, পাহাড় আর সাগরের স্পর্শ, আর তার চেয়েও বেশি—ভালোবাসা।
গাড়ির জানালা দিয়ে হালকা বাতাস ঢুকছে, সাহিদার চুল উড়ছে। আরাফাত চোখ সরাতে পারছে না।
— “দেখো না এভাবে তাকিও না,” সাহিদা বলল কাঁধে ধাক্কা দিয়ে।
আরাফাত মুচকি হাসে,
— “তোমার দিকেই তো আমার জানালা খোলা থাকে সবসময়।”
তিশা সামনে বসে বলে ওঠে,
— “এই এই! রোমান্স একটু কমাও! পাহাড় আসতে দাও আগে!”
মাহিয়া হেসে গড়িয়ে পড়ে।
—
রিসোর্ট
তারা উঠেছে মিরসরাইয়ের এক ছোট্ট কিন্তু মনোমুগ্ধকর রিসোর্টে।
দুটি রুম—একটা ছেলেদের, একটা মেয়েদের।
কিন্তু গল্পের ভেতর তো দেয়াল থাকে না।
রাত নেমেছে। নরম বাতাস বয়ে যাচ্ছে। দূরে পাহাড়ের সোঁ সোঁ শব্দ।
সাহিদা বারান্দায় দাঁড়িয়ে।
আরাফাত ধীরে ধীরে গিয়ে ওর পাশে দাঁড়ায়।
— “তুমি পাহাড়ের মতো নিঃশব্দ, অথচ ভিতরে আগুন।”
— “আর তুমি নদীর মতো—ধীরে ধীরে এসে আমাকে ঘিরে ফেলেছিস।”
আরাফাত সাহস করে সাহিদার হাত ধরে।
সাহিদা কিছু বলে না। শুধু ওর মাথাটা আরাফাতের কাঁধে রাখে।
একটা মুহূর্ত…
যেখানে শব্দ নিষেধ।
শুধু বুকের ভেতর ভালোবাসার স্পন্দন।
—
পরদিন সকাল
পাহাড়ি ট্রেইলে হাঁটছে চারজন।
তিশা ছবি তুলছে, মাহিয়া দৌড়াচ্ছে সামনে।
আর পিছনে আরাফাত আর সাহিদা—তারা একে অপরের চোখে পাহাড়ের চেয়েও উঁচু কিছু দেখছে।
এক জায়গায় এসে সাহিদা হঠাৎ পা মচকায়।
আরাফাত সঙ্গে সঙ্গে তাকে কোলে তুলে নেয়।
— “তুমি কি সবসময় এমন নায়ক হবা?” — “তুমি যদি সবসময় আমার নায়িকা থাকো.?
তিশা হেসে ওঠে,
— “এই জুটি তো সিনেমা বানিয়ে ফেলবে!”
—
রাত, রিসোর্ট
মাহিয়া আর তিশা ঘুমিয়ে পড়েছে।
আরাফাতের রুমে হালকা আলো জ্বলছে।
সাহিদা নিঃশব্দে দরজা খুলে ঢোকে।
— “ঘুমিয়ে গেছো?”
— “তুমি এলেই ঘুম আসে?”
সাহিদা পাশে বসে।
— “তোমার কাঁধে মাথা রেখে আমার ভয় কেটে যায়,” সে বলে।
আরাফাত তাকে জড়িয়ে ধরে।
একটা নরম, নিঃশব্দ চুমু পড়ে সাহিদার কপালে।
সাহিদা চোখ বন্ধ করে ফেলে বলে,
— “তুমি আমার জীবনের সবচেয়ে সত্যি গল্প…”
আরাফাত ওর ঠোঁট ছুঁয়ে বলে,
— “তুমি আমার সব লেখার শেষ লাইন… যেখানে লেখা থাকে, ‘তোমায় ভালোবাসি’।”
তারা নিঃশব্দে শুয়ে থাকে।
মাথার ওপর ছাদের পাখা ঘুরছে, আর ভেতরে ভেতরে—ভালোবাসা দুলছে।
—
চলবে…