• শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:০৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
🖋️ সনেট: চুলকানির বাম আর নারীনাম🙆 মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌼 প্রভাষক: আরবি বলদিআটা ফাজিল স্নাতক মাদ্রাসা। শিরোনাম: মানসিক শান্তি*  *রচনাঃ মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম তারিখ:২৩/১০/২০২৫ Master’s of Book – মাস্টার্স অব বুকস” আসছে আগামী ১৫ নভেম্বর। বাংলার কথা। শিরোনাম;বেসরকারি শিক্ষকের কান্না রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম  তারিখ:১৮/১০/২০২৫ 💐শিরোনাম: কৈডোলার স্মৃতিবিজড়িত সকাল ✍️লেখা: আপন ইতিহাস নির্ভর ছোট গল্প 🖋️রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম তারিখ:১৮/১০/২০২৫ কবিতাঃ- মান ইজ্জত সারা ✍️- রফিকুজ্জামান রফিক। Poem: The Watermark of the Heart. ✍️ Poet: Rownoka Afruz Sarkar গল্প: মায়ের হাতের ভাত, রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌺 তারিখ:১৭/১০/২০২৫ কবিতাঃ প্রেম লেখিকাঃ জান্নাতুন_ফেরদৌস । দৈনিক বাংলার কথা। শিরোনাম:“শিক্ষক জাগরণের গান” রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম  তারিখ:১৫/১০/২০২৫

কারবালা হতে পলাশী – ইতিহাস যা শিক্ষা দেয়

নেত্র পল্লব / ৩১৬ বার পড়া হয়েছে
আপডেট: বুধবার, ২ জুলাই, ২০২৫

কারবালা হতে পলাশী

লেখকঃ নবাবজাদা আলী আব্বাসউদ্দৌলা

(নবাব সিরাজউদ্দৌলার ৯ম রক্তধারা প্রজন্ম)

 

হিজরি চতুর্থ সনের তৃতীয় শা’বান গোটা মানবজাতি ও বিশেষ করে, ইসলামের ইতিহাসের এক অনন্য ও অফুরন্ত খুশির দিন তথা কারবালা বিপ্লবের মহানায়ক হযরত ইমাম হুসাইনের জন্মদিন। কারণ, এই দিনে ত্রিভুবনকে আলোকিত করে জন্ম নিয়েছিলেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)’র প্রাণপ্রিয় নাতি এবং ইসলামের চরম দূর্দিনের ত্রাণকর্তা ও শহীদদের নেতা হযরত ইমাম হুসাইন। ইমাম হুসাইনের জন্মের পর তাঁর ডান কানে আজান ও বাম কানে ইক্বামত পাঠ করেছিলেন স্বয়ং বিশ্বনবী (সা.)। মহান আল্লাহর নির্দেশে তিনি এই শিশুর নাম রাখেন হুসাইন। এ শব্দের অর্থ সুন্দর,সৎ,ভালো ইত্যাদি। আর ১৯ সেপ্টেম্বর বাংলার হিমালয় সমতুল্য সম্রাট “নবাব সিরাজউদ্দৌলা”-র জন্মদিন। ১৭২৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর তৎকালীন অ-বিভক্ত বাংলার রাজধানীতে জন্মগ্রহণ কারি “সিরাজউদ্দৌলা” মানে প্রকৃত ইসলামের সৌরভ, নবাব সিরাজউদ্দৌলা মানে মুক্তি, ইসলামের সাথে আমাদের ঐ না-লেখা ভালোবাসার চুক্তি। নবাব সিরাজউদ্দৌলা মানে আর কিছু না সিরাজউদ্দৌলা মানে হুসাইনি শক্তি, গর্বিত মুসলিম শির, বীর মুসলিম বাঙালির চিরকালের ভক্তি।তাঁদের পবিত্র শুভ জন্মদিন উপলক্ষে সবাইকে জানাচ্ছি প্রাণঢালা মুবারকবাদ এবং এই মহান দুই বীরের শানে পেশ করছি অশেষ সালাম ও দরুদ।
ইমাম হুসাইন ও নবাব সিরাজউদ্দৌলার মর্যাদা ও মহত্ত্ব এক বিশাল জগতকে জুড়ে ঘিরে আছে যে যার নানা দিক এতই অসীম ও অনন্ত যে এসবের প্রতিটি দিকই ইতিহাসের ব্যাপক অধ্যায়গুলোর মধ্যে শীর্ষস্থান দখল করে আছে। দৃশ্যতঃ তাঁরা ছিলেন সব উচ্চ মর্যাদা ও শীর্ষস্থানের সমষ্টি। ইমাম হুসাইন ইসলামের জন্য নিজের ও দুধের শিশুসহ নিজ সন্তানদের জীবন বিসর্জন এবং এমনকি নিজ পরিবারের নারী সদস্যদেরকেও বন্দীত্বের কঠোরতা বরণের অনন্য ত্যাগের জন্য স্বেচ্ছাসেবী হতে প্রস্তুত করার মাধ্যমে ত্যাগ আর বীরত্বের নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত রেখে অমর হয়ে আছেন, অপর দিকে নবাব সিরাজউদ্দৌলা বাংলা ও ইসলামের জন্য নিজ আম্মাজান, নানীজান, স্ত্রী লুৎফুন্নিসা ও নিজ একমাত্র সন্তান উম্মে জোহরার বন্দীত্বের কঠোরতা বরণের অনন্য ত্যাগের জন্য স্বেচ্ছাসেবী হতে প্রস্তুত করার মাধ্যমে ত্যাগ আর বীরত্বের নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত রেখে অমর হয়ে আছেন।ইমাম হুসাইন ও নবাব সিরাজউদ্দৌলা ইসলামের ইতিহাসের কালজয়ী মহাকাণ্ডারী।
যে কোনো বিবেকবান মানুষ কারবালা ও পলাশীর শহীদদের বীরত্বব্যাঞ্জক নীতির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করতে গর্ব অনুভব করেন এবং পাষানতম হৃদয়ের অধিকারী ব্যক্তিও তাঁদের অবর্ণনীয় কষ্টের শোকে ব্যথিত হন। অন্যদিকে প্রত্যেক বিবেকবান মানুষ পাষণ্ড মুয়াবিয়া-ইয়াজিদ, মীরজাফর- মিরন ও তার দলবলের নৃশংসতাকে পাশবিকতার চরম ঘৃণ্য প্রকাশ বলে মনে করেন। সেদিন কারবালায় ও সেদিন রক্তাক্ত পলাশী যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে নবী-বংশ ও নবাব আলীবর্দি পরিবারের প্রিয় সদস্যদের যতটুকু রক্ত জমিনে পড়েছিল তার চাইতে এক সাগর বেশি অশ্রু বিগত দিন গুলোয় বিসর্জন করেছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আওলাদে রাসুল ও নবী পরিবার অনুসারী নবাব আলীবর্দির প্রিয়জনদের জন্য। এমনকি অনেক অমুসলমানও যুগে যুগে অশ্রু বিসর্জন করেছেন শহীদ বিশ্ব যুব সম্রাট ইমাম হুসাইন ও বাংলার যুব সম্রাট নবাব সিরাজউদ্দৌলা ও তাঁর মহান সঙ্গীদের জন্য। হযরত ইমাম হুসাইন ও নবাব সিরাজউদ্দৌলা ছিলেন সম্মান,দয়া,বীরত্ব,শাহাদাত, মুক্তি ও মহানুভবতার আদর্শ। তাঁদের আদর্শ মানবজাতির জন্য এমন এক ঝর্ণাধারা বা বৃষ্টির মত যা তাদের দেয় মহত্ত্বম জীবন,গতি ও আনন্দ। মানুষের জীবনের প্রকৃত মর্যাদা ও প্রকৃত মৃত্যুর সংজ্ঞাকে কেবল কথা নয় বাস্তবতার মাধ্যমে দেখিয়ে দিয়ে অমরত্ব দান করে গেছেন এই দুই মহাপুরুষ। বিশেষ করে আল্লাহর পথে সর্বোচ্চ ত্যাগ ও শাহাদাতকে তাঁরা দিয়ে গেছেন অসীম সৌন্দর্য। তাই যুগে যুগে বিশ্বের কোটি কোটি সত্যবাদী মানুষের কাছে হুসাইন ও সিরাজ হয়ে আছেন গৌরবময় জীবন ও মৃত্যুর আদর্শ এবং আল্লাহর পথে শাহাদতের সংস্কৃতির সবচেয়ে বড় রূপকার।
ইসলামের শত্রুরা মহানবীর (সা) পবিত্র আহলে বাইত- তাঁদের পবিত্র নাম ও আহলে বাইতের অনুসারী নবাব আলিবর্দি খানের প্রিয় আপনজনদের ইতিহাস থেকে মুছে দিতে চেয়েছিল চিরতরে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে এর উল্টো। ইমাম হোসাইন ও নবাব সিরাজউদ্দৌলা মানবজাতির জন্য মর্যাদা ও গৌরবের উৎস,এক সুউচ্চ বাতিঘর এবং মহামূল্যবান সম্পদ। স্থান,কাল,ভিন্ন পরিস্থিতির আলোকে ইমাম হোসাইন – নবাব সিরাজউদ্দৌলা ও তাঁর সাথীরা বিশ্বের দরবারে চরম আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত পেশ করেছেন। তাঁরা অকাতরে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন তবুও অন্যায় অসত্যের কাছে নতি স্বীকার করেননি। কারবালাও পলাশীর মাটিতে সত্য মিথ্যার যে অসম লড়াই হয়েছিল,হিজরি ৬১ সাল ও ইং ১৭৫৭ থেকে প্রতিনিয়ত তা আমাদের হৃদয়কে দলিত মথিত করে শোকের মাতম উপচিয়ে শক্তির যোগান দেয়। তাইতো আজ কারবালা, মহররম,আশুরা, পলাশী সত্যের মাপকাঠিতে প্রতিষ্ঠিত।

বস্তুগত ধারণায় কারবালা ও পলাশীর প্রান্তরে ইয়াজিদ- মীর জাফর- ক্লাইভ- রাজ বল্লভ- জগৎ শেঠ- কৃষ্ণ চন্দ্র গং এবং ষড়যন্ত্র বিশ্বাসঘাতকতার বিজয় হয়েছিল। কিন্তু পৃথিবীর প্রকৃত সত্যবাদি মানুষেরা তা মানেনি। ২৩ জুন ১৭৫৭, আসলে এই দিনে কোন যুদ্ধের ঘটনা ছিল না। ছিল শুধু ষড়যন্ত্রের খেলা। সততা ও ন্যায়ের প্রতিক সিরাজউদ্দৌলা ও বাংলার স্বাধীনতা সেদিন কুচক্রীদের খেলার শিকারে পরিণত হয়েছিল। গৌরবের কথা এই যে, নিশ্চিত মৃত্যুর কথা জেনেও সিরাজ ইংরেজদের সঙ্গে হাত মেলাননি। হিন্দু ও ইংরেজরা দেশের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে ঠিক তবে সেটা রক্তাক্ত যুদ্ধের মধ্য দিয়ে নিয়েছে। বীর ইমাম হোসাইন যেমন ষড়যন্ত্রকারিদের সাথেহাত মেলাননি, তেমনি হাত মেলাননি দেশপ্রেমি সিরাজউদ্দৌলা। দেশি-বিদেশী সব লেখকও বলেছেন,ষড়যন্ত্রকারিদের বাহুবল নয় কারবালা ও পলাশীতে বিশ্বাসঘাতকতাই জয়ী হয়েছিল। আর বিশ্বাসঘাতকতার দ্বরুণ আমাদের প্রিয় ইমাম হোসাইন ও সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় হয়েছিল। ২ জনই নিঃসন্দেহে দেশপ্রেমিক সত্যবাদি ও ইসলামী বীর ছিলেন। তাঁরা প্রতারণা বা শঠতার আশ্রয় নিয়ে বেঁচে থাকারও চেষ্টা করেননি। তাইতো তাঁদের দৃঢ়তা,সাহস, ইসলাম প্রেম ও স্বদেশপ্রেম তাঁদেরকে বিশ্ব ইসলামী বীরের মর্যাদা দান করে।

কারবালা ও পলাশীর ষড়যন্ত্রের কুশীলবদের পরিণতি হয়েছিল অত্যন্ত ভয়াবহ ও মর্মান্তিক। অস্বাভাবিক পন্থায় এবং অত্যন্ত মর্মান্তিকভাবে আলিঙ্গন করতে হয়েছে তাদের মৃত্যুকে। তাদের সকলের উপরেই পড়েছিল আল্লাহর লানত। শুধু তাই নয়, মৃত্যুর পরেও বিশ্ববাসী যুগ যুগ তথা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে তাদের এই অপকর্মের প্রতি তীব্র নিন্দাবাদ প্রদান করে আসছে। কারবালা ও পলাশীর ইতিহাস রক্তাক্ত ইতিহাস,ষড়যন্ত্র ও বিশ্বাসঘাতকতার ইতিহাস, ট্রাজেডি ও বেদনাময় এক শোক স্মৃতির ইতিহাস।

আপসহীন লড়াকু মানুষের চোখে কারবালার শিক্ষা যেমন প্রতিটি ভুঁই কারবালা আর প্রতিদিন আশুরা। তেমনি বাংলার স্বাধীনতাকামী প্রকৃত মুসলমানদের হৃদয়পটে পলাশী মানে স্বাধীনতার সত্য আকাংখা, প্রতিনিয়ত বিশ্বাসঘাতকতার মোকাবেলায় প্রকৃত ইসলাম ও বাংলার স্বাধীনতা রক্ষার অঙ্গীকার। মিথ্যার কুজ্ঝটিকা সরিয়ে ইমাম হোসাইন ও নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে চিনে নেয়ার দায়িত্ব আমাদের সবার। ইমাম হোসাইন ও সিরাজউদ্দৌলা সকল মানবজাতির জন্য সত্যের প্রতিক। আমাদের মনের মণিকোঠায়,হৃদয়জগৎ জুড়ে, জাতিসত্তার পূর্ণ অবয়বে ইমাম হোসাইন ও সিরাজের স্থান।

লেখক : নবাব সিরাজউদ্দৌলার ৯ম রক্তধারা প্রজন্ম।

ইমেইল : Shab_01912 815940@Yahoo.com


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এজাতীয় আরো লেখা

📲 Kaj Kori App – মোবাইল দিয়ে ইনকাম করুন!

অ্যাপে রয়েছে Rocket Game, Ludo, Spin & Earn, আর্টিকেল রিডিং, রেফার বোনাস — ১০০ পয়েন্ট = ১ টাকা

📥 Kaj Kori App ডাউনলোড করুন