• শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম
শিরোনাম;বেসরকারি শিক্ষকের কান্না রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম  তারিখ:১৮/১০/২০২৫ 💐শিরোনাম: কৈডোলার স্মৃতিবিজড়িত সকাল ✍️লেখা: আপন ইতিহাস নির্ভর ছোট গল্প 🖋️রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম তারিখ:১৮/১০/২০২৫ কবিতাঃ- মান ইজ্জত সারা ✍️- রফিকুজ্জামান রফিক। Poem: The Watermark of the Heart. ✍️ Poet: Rownoka Afruz Sarkar গল্প: মায়ের হাতের ভাত, রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌺 তারিখ:১৭/১০/২০২৫ কবিতাঃ প্রেম লেখিকাঃ জান্নাতুন_ফেরদৌস । দৈনিক বাংলার কথা। শিরোনাম:“শিক্ষক জাগরণের গান” রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম  তারিখ:১৫/১০/২০২৫ ইনসাফভিত্তিক সমাজ ও বেতন-ভাতা নির্ধারণের গুরুত্ব, রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌺 তারিখ:১৫/১০/২০২৫ শিরোনাম:শিক্ষকের বাজেট রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম তারিখ:১৫/১০/২০২৫ শিরোনাম: শিক্ষকদের জীবনের বাজেট  💐রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম  💐তারিখ:১৫/১০/২০২৫

 ‎সোহাগী জাহান তনু হত্যা: এক অমীমাংসিত বেদনা ও বিচারের দীর্ঘ অপেক্ষা

মোঃ আরাফাতুল ইসলাম / ৬০ বার পড়া হয়েছে
আপডেট: সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫

 ‎সোহাগী জাহান তনু হত্যা: এক অমীমাংসিত বেদনা ও বিচারের দীর্ঘ অপেক্ষ

‎২০১৬ সালের ২০ মার্চ। একটি তারিখ, একটি নাম – সোহাগী জাহান তনু। এই দুটি শব্দ যখনই উচ্চারিত হয়, তখনই আমাদের মনে ভেসে ওঠে এক মর্মান্তিক ঘটনা, এক অমিমাংসিত হত্যার রহস্য এবং বিচারের জন্য দীর্ঘ সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান এক বেদনাদায়ক অপেক্ষা। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী এবং জনপ্রিয় নাট্যকর্মী তনুকে সেদিন সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। এই ঘটনা শুধু একটি হত্যাকাণ্ড নয়, এটি আমাদের সমাজের গভীর ক্ষত, আইনশৃঙ্খলার প্রতি মানুষের আস্থার সংকট এবং ন্যায়বিচার প্রাপ্তির এক অনিশ্চিত যাত্রার প্রতীক।

‎সেই ভয়াল রাত এবং প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া

‎সোহাগী জাহান তনু প্রাইভেট পড়ানোর উদ্দেশ্যে সেদিন সেনানিবাসের ভেতরের এক বাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু রাতে তার পরিবারের কাছে ফিরে আসেনি। উদ্বিগ্ন পরিবারের সদস্যরা তাকে খুঁজতে গিয়ে সেনানিবাসের পাওয়ার হাউসের অদূরে একটি ঝোপের মধ্যে তার রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ দেখতে পান। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হয়, তাকে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হতে হয়েছে। এই খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং মুহূর্তেই সারাদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে মানবাধিকার কর্মী, সংস্কৃতিকর্মী এবং সর্বস্তরের মানুষ তনু হত্যার বিচার দাবিতে ফুঁসে ওঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে রাজপথ – সর্বত্র একটাই দাবি ছিল: তনু হত্যার বিচার চাই!

‎তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতা ও বিতর্কের ঘূর্ণিপাক

‎মামলার তদন্তভার প্রথমে স্থানীয় পুলিশ, তারপর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), পরবর্তীতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এবং সবশেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর হাতে যায়। এতগুলো তদন্ত সংস্থা পরিবর্তনের পরও মামলার কোনো সুনির্দিষ্ট অগ্রগতি না আসা বিচার প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলেছে।

‎সবচেয়ে বিতর্কিত ছিল প্রাথমিক ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন, যেখানে তনুকে ধর্ষণ বা হত্যার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়। এই প্রতিবেদন সারাদেশে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয়। জনমতের চাপে উচ্চ আদালতের নির্দেশে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করা হয়, যেখানে “যৌন সংসর্গের” প্রমাণ মেলার কথা বলা হয়। পরবর্তীতে, সিআইডি’র নিজস্ব ল্যাবে তনুর পরিধেয় বস্ত্র থেকে তিনজন পুরুষের বীর্যের ডিএনএ নমুনা পাওয়া যায়। কিন্তু এই তিনজন পুরুষ কারা, তাদের পরিচয় কী, তা আজও অজানা। এই ডিএনএ রিপোর্ট পাওয়ার পরও হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে না পারাটা বিচারপ্রার্থীদের জন্য একরাশ হতাশা বয়ে এনেছে।

‎সেনানিবাস এবং ‘ভেতরের যোগসাজশ’ – জনমনে দানা বাঁধা প্রশ্ন

‎তনু হত্যাকাণ্ড সাধারণ একটি অপরাধ ছিল না। এটি ঘটেছিল দেশের অন্যতম সুরক্ষিত এলাকা সেনানিবাসের অভ্যন্তরে। এই বিষয়টিকে ঘিরেই জনমনে অসংখ্য প্রশ্ন ও সন্দেহ দানা বেঁধেছে। কীভাবে বাইরের তিনজন ব্যক্তি এত কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে ভেতরে প্রবেশ করে এমন একটি জঘন্য কাজ করে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যেতে পারে? সাধারণ মানুষের পক্ষে কি এটা সম্ভব? এই প্রশ্নগুলোই জনমনে এই ধারণা তৈরি করেছে যে, এর পেছনে সেনানিবাসের ভেতরের কারো যোগসাজশ থাকতে পারে।

‎এই সংবেদনশীল দিকটিই মামলার তদন্তকে আরও জটিল করে তুলেছে বলে অনেকে মনে করেন। এই কারণেই বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে জনগণের আস্থাহীনতা বেড়েছে। তনুর পরিবার, বিশেষ করে তার মা-বাবা, বিচার প্রাপ্তির আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন। তাদের কান্না ও আর্তনাদ ভার্চুয়ালি দেখেও বহু মানুষের চোখ ভিজে উঠেছে। এই অসহায়ত্ব সমাজের এক সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরে।

‎বিচারের দাবি ও আশার আলো

‎তনু হত্যার দীর্ঘসূত্রিতা এবং ন্যায়বিচার না পাওয়াটা আমাদের বিচার ব্যবস্থার একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা, সাধারণ জনগণ, সেনাবাহিনীর প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেও বলতে চাই – যারা এই জঘন্য কাজ করেছে, তারা সাধারণ মানুষ হোক বা সামরিক বাহিনীর সদস্য, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক। কোনো পরিচয়, কোনো পদমর্যাদা যেন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বাধা হয়ে না দাঁড়ায়।

‎আমরা বিশ্বাস করি, যত দেরিই হোক না কেন, একদিন সত্য প্রকাশিত হবে এবং দোষীরা শাস্তি পাবে। আর যদি এই দুনিয়াতে ন্যায়বিচার অধরাই থাকে, তবে আমরা আশা রাখি, মহান সৃষ্টিকর্তা রোজ হাশরের দিন এর বিচার করবেন। তনুর মতো আর কোনো নির্দোষ প্রাণের যেন এমন করুণ পরিণতি না হয় এবং প্রতিটি অপরাধের যেন দ্রুত ও সুষ্ঠু বিচার হয় – এটাই আমাদের সম্মিলিত প্রত্যাশা। এই বিচারের অপেক্ষায় প্রতিটি মুহূর্ত যেন একটি করে প্রহর গুনছে আমাদের সকলের হৃদয়।

প্রকাশকাল: ১৩ জুলাই ২০২৫

প্রকাশক: বাংলার কথা অনলাইন পত্রিকা

লেখক: মোঃ আরাফাতুল ইসলাম 

তথ্যসূত্র: অনলাইন মাধ্যম থেকে যাচাই করে প্রস্তুত।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এজাতীয় আরো লেখা

📲 Kaj Kori App – মোবাইল দিয়ে ইনকাম করুন!

অ্যাপে রয়েছে Rocket Game, Ludo, Spin & Earn, আর্টিকেল রিডিং, রেফার বোনাস — ১০০ পয়েন্ট = ১ টাকা

📥 Kaj Kori App ডাউনলোড করুন