বাবুরা ব্যস্ত
– রাসেল মন্ডল
(নদীয়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত)
বাবুরা ব্যস্ত, চোখে ঘন এক অন্ধকার,
চশমার কালি ঢেকে দেয় চোখের রঙিন সংসার।
স্ক্রিনে গড়ে কল্পনার এক নতুন ভুবন,
বাস্তবের সাথে নেই আজ কোনো গভীর বন্ধন।
প্রশ্ন-উত্তর চলে ভিডিওর জটে,
বিচ্ছেদের পাঠই মেলে রিলসের পটে।
স্ট্যাটাসে ভরে ওঠে আধভাঙা মন,
প্রতিক্রিয়ায় খোঁজে আত্মার শেষ বাঁচন।
আলাপ চলে যন্ত্রের মতো, নীরব ও শুষ্ক,
ভাষা ফুরায়, সম্পর্কগুলো হয় নিঃশব্দে ভগ্ন।
সিগারেটের ধোঁয়াই নাকি চেতনার দিশা,
শিক্ষার নামে শেখে আজ দুর্নীতির দীক্ষা।
অহংকারে বাড়ে ওজন, বাড়ে সাজসজ্জায়,
কেউ দেখেও না কার কী চলছে অন্তর্দশায়।
চোখের সামনেও লাগে যেন অপরিচয়ের রেশ,
লাজে মুখ লুকায় আপন চেনা বেশ।
হিংসা ঢেকে দেয় হৃদয়ের মূল রঙ,
নিজেকেই পোড়ায়, নিজেই সাজে সং
ভালোবাসা আজকাল শব্দেরই খেলা,
মন খুলে বলা নয়, শুধু মেসেজের মেলা।
মুখে ভালোবাসা, মনে নেই তার রঙ,
রঙিন পর্দায় ঢেকে যায় অনুভবের ঢঙ।
হৃদয়ে শূন্যতা, ভাষায় অভিজ্ঞান,
রোবোটিক কৃত্রিমতায় হারায় প্রাণ।
বাবুরা ব্যস্ত, ক্লান্ত সভ্যতা চুপ,
ঘরের মধ্যেই আলাদা রাজ্য… দেয়ালের ফাটা রূপ।
আলোকিত গ্যাজেট, অথচ মন ভারী,
শূন্যতায় ডুবে জীবন… নিঃসঙ্গ এক তরী।
হাসি আছে, আলো আছে, তবু নীরব চোখ,
মানুষ খোঁজে মানুষকে… মুখোশে ঢাকা শোক।
চেনা মুখের মাঝে অচেনা ব্যথার নেশা,
এই কি তবে আধুনিকতায় উজ্জ্বল হতাশা?