ছোট গল্প:অকৃতজ্ঞ বন্ধু
রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম
তারিখ:২৮/১০/২০২৫
অনেক দিন আগের কথা। নদীর তীরের এক গ্রামে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিল। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। অনেক প্রাণী তাদের জীবন বাঁচাতে ছুটোছুটি করছে।
সেই সময় এক বেলেহাঁস নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে নদীর ওপারে যাচ্ছিল। তার শক্ত পাখা ও সাঁতারের ক্ষমতায় সে সহজেই ভেসে যাচ্ছিল। হঠাৎই নদীর মাঝখানে এক ইঁদুর ভেসে আসতে লাগল। ডুবে যাওয়ার উপক্রম হলে ইঁদুর চিৎকার করে বলল—
—“ভাই হাঁস! দয়া করে আমাকে বাঁচাও। তোমার পিঠে চড়ে আমি ওপারে যেতে চাই। একবার আমাকে নিয়ে গেলে আমি নেমে যাব।”
সহজ-সরল মনের হাঁসের করুণা জাগল। সে ভাবল, প্রাণ বাঁচানো তো বড় কাজ। তাই দেরি না করে ইঁদুরকে পিঠে তুলে নিল।
প্রথমে সব ঠিকই চলছিল। কিন্তু মাঝপথে ইঁদুরের পেটে ভয়ানক ক্ষুধা জাগল। পানি আর ভয়ের কারণে তার মাথা কাজ করছিল না। সুযোগ বুঝে সে হাঁসের কোমল পালক কামড়াতে শুরু করল।
ব্যথায় কুঁকড়ে গেল বেলেহাঁস, কিন্তু মাঝ নদীতে কিছু করার ছিল না। কষ্ট সহ্য করেই সে ইঁদুরকে ওপারে পৌঁছে দিল। যখন গিয়ে নামল, তখন হাঁস বুঝল—তার ডানা প্রায় নষ্ট হয়ে গেছে।
হাঁস হাহাকার করে বলল—
—“আমি তোমার উপকার করলাম, আর তুমি আমার ক্ষতি করলে! এ কেমন অকৃতজ্ঞতা?”
অসহায় হাঁস দীর্ঘ সময় উড়তে পারল না, নতুন পালক গজাতে তার অনেক দিন লেগে গেল। কিন্তু সেই ইঁদুর গ্রামে ফিরে গিয়ে মানুষের ধান-গম কেটে খেয়ে ফসল নষ্ট করতে লাগল।
শেষ পর্যন্ত সবাই বুঝল—
ক্ষতিকারক ও অকৃতজ্ঞকে বাঁচানো দয়া নয়, বরং নতুন বিপদ ডেকে আনে।
🖋️রচনায়: মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম
🍌প্রভাষক হাদীস পরানপুর কামিল মাদ্রাসা মান্দা নওগাঁ।
Copyright ©️ All rights reserved by author maulana MD FARIDUL ISLAM.
প্রকাশকঃ সবুজ হুসাইন।
সম্পাদকঃ মোঃ ইমদাদুল হক নয়ন।