• মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০২:২৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
🖋️ গল্প: “আলেয়ার আফসোস আর সলিম উল্লাহর বোধোদয়”। রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌺 মজার গল্প : বাঁশ খানের ন্যায়ের বাঁশ রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম ছোট গল্প: ক্ষুদ্র প্রাণীর শক্তি রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম  গল্প: “ছাগলের বাচ্চার হক” রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম  💐গল্প: ভালোবাসার ঘোষণা, রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌺 🍌বাংলাদেশের মাজার সংস্কৃতি ও গাজার বাজার: একটি বিশ্লেষণমূলক প্রবন্ধ, রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌺 তারিখ:২/০৪/২০২৩ শিরোনাম:স্বামীর পর্যাপ্ত সম্পদ না থাকা সত্ত্বেও দাবি দাওয়া আদায় প্রসঙ্গে।, রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম গল্প: মুরগি ও শিয়ালের চালাকি, রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম। 🖋️স্বামীকে অপমান ও তার কৃতজ্ঞতা স্বীকার না করার পরিণাম: ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি, রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌺 তারিখ:১/১১/২০২৫ শিরোনাম:কচুরিপানার পুকুর ও জোকার মিয়ার জীবন। শিক্ষনীয় গল্প: রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম  তারিখ:১/১১/২০২৫

শিরোনাম:স্বামীর পর্যাপ্ত সম্পদ না থাকা সত্ত্বেও দাবি দাওয়া আদায় প্রসঙ্গে।, রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম

Reporter Name / ১২ বার পড়া হয়েছে
আপডেট: সোমবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৫

শিরোনাম:স্বামীর পর্যাপ্ত সম্পদ না থাকা সত্ত্বেও দাবি দাওয়া আদায় প্রসঙ্গে।

রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম

 

ভূমিকা

 

বিবাহ ইসলামের এক মহান নিয়ামত। আল্লাহ তায়ালা বলেন,

 “তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো—তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের জন্য স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের নিকট শান্তি পাও, এবং তিনি তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন।”

(সূরা রূম: ২১)

 

বিবাহ শুধু একটি সামাজিক বন্ধন নয়, বরং এটি পারস্পরিক দায়িত্ব, সহানুভূতি ও আত্মত্যাগের এক সুন্দর প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বাস্তব জীবনে দেখা যায়, অনেক সময় স্ত্রীরা স্বামীর আর্থিক অবস্থা বিবেচনা না করেই দাবি তোলেন — যেমন বেশি গহনা, পোশাক, ব্যয়বহুল সাজসজ্জা বা আলাদা বাসস্থানের জন্য জোরাজুরি ইত্যাদি। এই প্রবণতা পারিবারিক শান্তি নষ্ট করে এবং ইসলামী দৃষ্টিতে তা গ্রহণযোগ্য নয়।

 

 

✓ইসলামের দৃষ্টিতে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক দায়িত্ব

 

ইসলাম উভয় পক্ষকেই ন্যায্যতার সীমায় থাকতে শিক্ষা দিয়েছে। স্বামী তার সাধ্য অনুযায়ী স্ত্রীকে ভরণপোষণ দেবে, আর স্ত্রী তার স্বামীর সামর্থ্যের সীমা বুঝে জীবনযাপন করবে।

 

✍️আল্লাহ তায়ালা বলেন,

 “যার সম্পদ প্রশস্ত, সে প্রশস্তভাবে ব্যয় করুক; আর যার জীবিকা সীমিত, সে আল্লাহ তাকে যতটুকু দিয়েছেন, ততটুকুই ব্যয় করুক।”

(সূরা আত-তালাক: ৭)

 

এই আয়াত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়—ভরণপোষণের দায় স্বামীর হলেও, তা তার সামর্থ্যের সীমার মধ্যেই হতে হবে। অর্থাৎ, স্ত্রী বা পরিবারের কেউ এমন দাবি করতে পারে না যা স্বামীর বাস্তব আর্থিক অবস্থার বাইরে।

 

✓নবী করিম ﷺ–এর জীবন থেকে শিক্ষা

 

রাসূলুল্লাহ ﷺ নিজ জীবনে দারিদ্র্য ও সংযমের এক উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তাঁর স্ত্রীগণও কখনো অতিরিক্ত দাবি করেননি। বরং তাঁরা সবসময় ধৈর্য ধারণ করতেন।

একবার নবী ﷺ–এর স্ত্রীগণ কিছু অতিরিক্ত ব্যয়ের দাবি করলে নবীজি ﷺ রাগান্বিত হন। তখন তিনি এক মাস তাঁদের থেকে পৃথক থাকেন। পরে আল্লাহ তায়ালা আয়াত নাজিল করেন—

 

✍️“হে নবী! তুমি তোমার স্ত্রীদের বলো—যদি তোমরা দুনিয়ার জীবন ও তার সৌন্দর্য চাও, তবে এসো, আমি তোমাদের কিছু দান করে সুন্দরভাবে বিদায় দেব। আর যদি তোমরা আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও পরকাল কামনা করো, তবে আল্লাহ তোমাদের মধ্যে সৎদের জন্য মহা পুরস্কার প্রস্তুত রেখেছেন।”

(সূরা আল-আহযাব: ২৮-২৯)

 

এই ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা বোঝাতে চেয়েছেন যে, দুনিয়াবি প্রাচুর্য চাওয়া ও অতিরিক্ত দাবি করা ইসলামী চরিত্রের পরিপন্থী।

 

✓অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও স্ত্রীর দায়িত্ব

 

যখন স্বামী আর্থিকভাবে দুর্বল থাকে, তখন স্ত্রীর কর্তব্য হলো ধৈর্য, সহমর্মিতা ও সান্ত্বনা প্রদান করা। এটি কেবল নৈতিক নয়, বরং ইমানের পরিচায়কও বটে।

 

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন—

 “দুনিয়া একটি উপভোগ, আর দুনিয়ার সর্বোত্তম উপভোগ হলো নেককার স্ত্রী।”

(সহীহ মুসলিম)

একজন নেককার স্ত্রী সেই যিনি স্বামীর কষ্টে পাশে দাঁড়ান, তার সামর্থ্যের সীমা বুঝে জীবনযাপন করেন এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় ধৈর্য ধারণ করেন।

 

✓অতিরিক্ত দাবি ও তার পরিণতি

 

অধিকাংশ পারিবারিক কলহের সূচনা হয় আর্থিক বিষয় থেকে। যখন স্ত্রী স্বামীর সামর্থ্যের বাইরে দাবি তোলেন—

✓তখন স্বামী মানসিক চাপে পড়েন,

✓সংসারে অসন্তোষ জন্ম নেয়,

✓স্বামী ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারেন,

✓অবশেষে সম্পর্কের মধুরতা হারিয়ে যায়।

✓রাসূলুল্লাহ ﷺ সতর্ক করে বলেছেন,

 

 ✓মুআয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ পৃথিবীতে কোন স্ত্রীলোক যখনই তার স্বামীকে কষ্ট দেয় তখনই (জন্নাতের) বিস্তৃত চক্ষুবিশিষ্ট হুরদের মধ্যে তার (ভাবী) স্ত্রী বলে, হে অভাগিনী! তাকে কষ্ট দিও না। তোমাকে আল্লাহ তা’আলা যেন ধ্বংস করে দেন! তোমার নিকট তো তিনি কিছু সময়ের মেহমান মাত্র। শীঘ্রই তোমার হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে তিনি আমাদের নিকট চলে আসবেন।

(সহীহ্, ইবনু মাজাহ )

 

অর্থাৎ, স্বামীকে অযথা মানসিক কষ্ট দেওয়া এমন এক অন্যায়, যার পরিণতি আখিরাতে অত্যন্ত ভয়াবহ হতে পারে।

 

✓ইসলামী সমাধান: মিতব্যয়িতা ও পরস্পর বোঝাপড়া।

 

ইসলাম উভয় পক্ষকেই ভারসাম্যের শিক্ষা দেয়। যেমন—

 

1. স্বামী যেন কৃপণ না হয়, বরং নিজের সাধ্য অনুযায়ী স্ত্রী ও সন্তানদের খরচ দেন।

নবী ﷺ বলেছেন,

“তুমি যা ব্যয় করো, এমনকি স্ত্রী-সন্তানের মুখে যে গ্রাস তুলে দাও, তাও সদকা হিসেবে গণ্য হয়।” (বুখারী, মুসলিম)

 

2. স্ত্রী যেন সন্তুষ্ট থাকেন, অতিরিক্ত দাবি না করেন এবং কৃতজ্ঞ হৃদয়ে জীবনযাপন করেন।

 

🕯️নবী ﷺ বলেছেন, ‘যে নারী স্বামীর অবাধ্য হয় এবং অকৃতজ্ঞ হয়।’ তুমি যদি দীর্ঘদিন তাদের কারো প্রতি ইহসান করতে থাক, অতঃপর সে তোমার সামান্য অবহেলা দেখতে পেলেই বলে ফেলে, ‘আমি কক্ষণো তোমার নিকট হতে ভালো ব্যবহার পাইনি।’

(বুখারী)

 

সুতরাং, পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা, ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতা বজায় রাখা পারিবারিক শান্তির মূলভিত্তি।

 

✓বাস্তব শিক্ষা

আজকের সমাজে প্রতিযোগিতামূলক জীবনযাত্রা, বিলাসিতা ও সামাজিক প্রদর্শনের প্রবণতা দাম্পত্য জীবনের ভারসাম্য নষ্ট করছে। অনেক স্ত্রী সামাজিক মর্যাদার দোহাই দিয়ে স্বামীর আয়ের সীমা না জেনে দাবি করেন—

 “অমুকের মতো গয়না চাই”, “ওদের মতো সাজঘর চাই”, “আমাদেরও গাড়ি থাকা দরকার” ইত্যাদি।

এইসব দাবি যদি স্বামীর সাধ্যের বাইরে হয়, তবে তা শুধু অন্যায় নয়, বরং একধরনের জুলুমও বটে।

 

✓আল্লাহ তায়ালা স্পষ্ট বলেছেন,

 “আল্লাহ কোনো প্রাণীকে তার সাধ্যের বাইরে দায়িত্ব দেন না।”

(সূরা আল-বাকারা: ২৮৬)

 

অতএব, স্বামীর ওপর এমন বোঝা চাপানো, যা তার সাধ্যের বাইরে, তা আল্লাহর বিধান লঙ্ঘন করার শামিল।

 

✓উপসংহার

 

দাম্পত্য জীবন হলো পারস্পরিক সহানুভূতি, ধৈর্য ও কৃতজ্ঞতার পথ। স্বামীর সম্পদ পর্যাপ্ত না থাকা অবস্থায় স্ত্রী যদি ধৈর্য ধারণ করেন, তবে আল্লাহ তায়ালা তাঁর সেই ধৈর্যের বিনিময়ে অনন্ত কল্যাণ দান করবেন।

 

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

“নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।”

(আল কোরআন)

 

অতএব, যে স্ত্রী তার স্বামীর কষ্টে পাশে থাকে, সামর্থ্য অনুযায়ী জীবনযাপন করে, সে শুধু একজন উত্তম স্ত্রী নয় — বরং সে জান্নাতের অধিকারিণী।

সুতরাং স্বামী নয় বিভিন্ন রাষ্ট্র ক্ষমতায়ও যদি কেউ সরকারের সামর্থ্য না  থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন দাবি দেওয়া উত্থাপন করে তা গ্রহণযোগ্য নয়।

🍌শেষ কথা

 

ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয়—অর্থই সুখ নয়, বরং সন্তুষ্টি, ধৈর্য ও পারস্পরিক ভালোবাসাই প্রকৃত সুখের চাবিকাঠি। তাই স্বামীর সম্পদ অপ্রচুর হলেও, যদি উভয়েই আল্লাহভীরু হয় ও একে অপরের প্রতি সহা

নুভূতিশীল হয়, তবে তাদের সংসার হবে জান্নাতের পূর্বাভাস।

 

শেষ কলমে, 

মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম

Copyright ©️ All rights reserved by author maulana MD FARIDUL ISLAM.


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এজাতীয় আরো লেখা

📲 Kaj Kori App – মোবাইল দিয়ে ইনকাম করুন!

অ্যাপে রয়েছে Rocket Game, Ludo, Spin & Earn, আর্টিকেল রিডিং, রেফার বোনাস — ১০০ পয়েন্ট = ১ টাকা

📥 Kaj Kori App ডাউনলোড করুন