• সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ভ্রমণ কাহিনী:কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিন দ্বীপ রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌺  তারিখ:২৭/১০/২০২৫ শিরোনাম:ও আমার প্রিয়তমা স্ত্রী, রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম  তারিখ:২৭/১০/২০২৫ শিরোনাম:ছকিনার টোস্টের গল্প তারিখ:১৭/১০/২০২৫ 💐 শিরোনাম:আলতাদীঘির সোহাগীর  বাতি🕯️ , রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌺 তারিখ:২৬/১০/২০২৫ ছোট গল্প:বইয়ের পাতায় লুকিয়ে থাকা বারোটি বছর। ✂️ছোট গল্প: কাঁচির লাইসেন্স (গ্রামীণ প্রেক্ষাপটে রচিত একটি হৃদয়স্পর্শী গল্প) শিরোনাম:পুষ্প রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম তারিখ:২৬/১০/২০২৫ স্কীলস্ ফর ইন্ডাষ্ট্রি কম্পিটেটিভনেস এন্ড ইনোভেশন (SICIP) ✍️শিরোনাম: মিথ্যার আগুন ও সত্যের আলো (গ্রামীন জীবনের ভুল বোঝাবুঝি ও সহীহ হাদীসের শিক্ষাভিত্তিক গল্প), রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌺 তারিখ:২৫/১০/২০২৫ 💐পূর্ব পাড়ার মানতুর ছাগল খামার: এক স্বপ্নের উত্থান। ✍️রচনায় মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম 🌺তারিখ:২০/১০/২০২৫

শিরোনাম:ছকিনার টোস্টের গল্প তারিখ:১৭/১০/২০২৫

Reporter Name / ১০ বার পড়া হয়েছে
আপডেট: সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫

 

 

 

শিরোনাম:ছকিনার টোস্টের গল্প

তারিখ:১৭/১০/২০২৫

 

নাটোর জেলার শান্ত-সুন্দর গ্রাম কাশি কাটা। গ্রামের বাতাসে এখনো মাটির গন্ধ, পাখির ডাক আর সকালবেলার শিশিরের ছোঁয়া। এই গ্রামেই বাস টুকুন ফকিরের। এক সময় ছিল তিনি নামাজি, পরহেজগার মানুষ। খেত-খামারে কাজ করতেন, মানুষের কাজে লাগতেন, কষ্ট করে জীবন চালাতেন।

টুকুন ফকিরের একমাত্র মেয়ে ছকিনা—চোখে মুখে বুদ্ধির ঝিলিক। গ্রামের স্কুলেই পড়ে, কিন্তু তার রুচি ছিল একটু আলাদা। ছকিনার বড় প্রিয় খাবার হাফ টোস্ট। সকালে স্কুলে যাওয়ার আগে বা বিকেলে পড়ার ফাঁকে—হাফ টোস্ট যেন তার জীবনের আনন্দের প্রতীক।

 

প্রথমে নিজের টাকায় খেত, পরে ভাবল—“আমি একা খাবো কেন? আমার বন্ধুরাও যদি একটু খেতে পারে!”

তাই, ছকিনা মাঝে মাঝেই নিজের বন্ধুদেরও হাফ টোস্ট খাওয়াত।

বন্ধুরা মজা করে তাকে ডাকে—“টোস্টওয়ালি ছকিনা!”

ছকিনাও হেসে বলত—“ডাকো না ডাকো, আমি টোস্ট খাওয়াতে পছন্দ করি!”

 

কিন্তু দিন যায়, কালের চাকা ঘোরে।

যে হাফ টোস্ট একসময় ৫০ টাকায় কেজি ছিল, তা একদিন দাঁড়াল ১০০ টাকায়।

দালাল চক্র যেন বাজারের রক্তচোষা পোকা—চুপিচুপি দাম বাড়িয়ে ফেলল।

ছকিনা প্রথমে ভেবেছিল, “চলুক, মাঝে মাঝে খাব।”

কিন্তু পরে যখন দেখল, টোস্টের দাম দ্বিগুণ, তখন তার চোখ খুলে গেল।

 

সে একদিন হতাশ হয়ে বলল,

 

> “এই টোস্টেও দালালি ঢুকে পড়েছে! মানুষের পেটে যা যায়, তাতেও দালাল বসে আছে!”

 

 

দিন গেল, হাফ টোস্টের জায়গা নিল সিঙ্গারা।

ভাবল, “চল সিঙ্গারাতো সস্তা, সেটাই খাই।”

কিন্তু কিছুদিন যেতেই সিঙ্গারার দামও দ্বিগুণ!

যে সিঙ্গারা ৫ টাকায় পেত, তা এখন ১০ টাকায়ও মেলে না।

ছকিনা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,

 

> “হায়রে সিঙ্গারাতেও দালালি! কই যাবো এখন?”

 

 

তার বন্ধুরা হাসে, কেউ কেউ বলে,

 

> “দেখো, আমাদের টোস্টওয়ালি ছকিনা এখন ভাবুক হয়েছে! সবখানেই সে দালাল দেখে!”

 

 

কিন্তু হাসির আড়ালে এক বড় সত্য লুকিয়ে ছিল।

ছকিনা বুঝতে শুরু করল—

এই দালাল চক্র শুধু বাজারেই নয়,

দেশের প্রতিটি স্তরে ঢুকে গেছে—হাসপাতালে, পশুর হাটে, স্কুলে, চাকরিতে, এমনকি ন্যায়বিচারের অঙ্গনেও।

 

বছর ঘুরে যায়। ছকিনা বড় হয়, লেখাপড়া শেষ করে শহরে চাকরি পায়।

চাকরির প্রথম বেতন হাতে পেয়ে সে ভাবে—

 

> “আজ যদি বাবা থাকতেন, খুশিতে হয়তো হাফ টোস্ট খেতে খেতে বলতেন, ‘বাবা, এখন তো তোরও উপার্জন হয়েছে।’”

 

একদিন বাজারে গিয়ে সে পুরনো স্মৃতির টান পায়।

দোকানে দাঁড়িয়ে বলে, “ভাই, হাফ টোস্ট কত?”

দোকানদার বলে, “দেড়শ টাকা কেজি!”

ছকিনার মুখে হাসি আসে, কিন্তু চোখে জল টলমল করে।

সে ভাবে—

 

> “এই টোস্টই তো একদিন ৫০ টাকায় খেতাম! ২০ বছর পর দাম তিনগুণ! হায়রে দালালি!”

বাড়ি ফিরে জানালার ধারে বসে ছকিনা ভাবে,

“এই দালালির রাজত্ব কি কখনো শেষ হবে?

মানুষ কি আবার ঈমান-আমলে ফিরে আসবে না?”

তার মনের মধ্যে একধরনের আক্ষেপ জমে যায়।

শিক্ষিত সমাজ, উন্নত প্রযুক্তি—সবই হয়েছে,

কিন্তু মানুষের বিবেক, ন্যায়বোধ আর ঈমান যেন হারিয়ে গেছে।

 

ছকিনা প্রায়ই নিজের ছাত্রছাত্রীদের বলে,

 

> “বাবারা, মানুষ হতে হলে আগে সৎ হতে হবে।

দালালি করে কেউ বড় হয় না।

যার ঈমান আছে, সে কারও হক মারে না।”

সময় গড়িয়ে যায়, ছকিনা এখন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা।

তার টেবিলের ড্রয়ারে এক টুকরো পুরনো হাফ টোস্ট রাখা। শুকনো, শক্ত হয়ে গেছে।

কেউ জিজ্ঞেস করলে সে বলে—

“এটা আমার অতীত, আমার শিক্ষা।

এই টোস্ট আমাকে শিখিয়েছে,

সৎ না থাকলে সমাজে দালালই রাজা হয়ে যায়।”

প্রতিদিন সকালে সে জানালার পাশে দাঁড়িয়ে সূর্যের আলোয় হাত তুলে দোয়া করে—

“হে আল্লাহ, আমাদের সমাজ থেকে দালালি দূর করো।

মানুষের অন্তরে ঈমান জাগাও।”

তার মুখে শান্তির হাসি।

কারণ সে জানে—পরিবর্তন একদিন আসবেই,

যদি মানুষ নিজেকে বদলাতে চায়।

 

অতি সংক্ষিপ্ত-ভালো লাগলে কমেন্ট করবেন আরও আসছে।

 

🖋️শেষ কলমে,

মাওলানা মোঃ ফরিদুল ইসলাম

প্রভাষক হাদীস পরানপুর কামিল মাদ্রাসা মান্দা নওগাঁ।

 

Date:17/10/2025

Copyright ©️ All rights reserved by author maulana MD FARIDUL ISLAM.


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এজাতীয় আরো লেখা

📲 Kaj Kori App – মোবাইল দিয়ে ইনকাম করুন!

অ্যাপে রয়েছে Rocket Game, Ludo, Spin & Earn, আর্টিকেল রিডিং, রেফার বোনাস — ১০০ পয়েন্ট = ১ টাকা

📥 Kaj Kori App ডাউনলোড করুন